Connect The New World

Wednesday, April 15, 2015

হাজী মুহসীনের দুই ঘড়ি

ছোটবেলায়
 হাজী মুহসীনের জীবনী পড়েছি স্কুলের বইয়ে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে পা
রাখার পর তাঁর স্মৃতিধন্য ইমামবাড়া ঘুরে দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।
বিরাট এক এলাকায় ৪২ বিঘা জায়গার ওপর তৈরি। খরচ হয়েছিল দুই লাখ ১৭ হাজার
টাকা। নির্মাতা ছিলেন কেরামত আলী নামের এক বিখ্যাত প্রকৌশলী। ইমামবাড়া এখন
 বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।

    ইমামবাড়ার প্রবেশপথে বিরাট এক লোহার গেট। আমরা ভেতরে ঢুকছি, হঠাৎ চমকে
গেলাম ভীষণ শব্দ শুনে। আশপাশে খুঁজতে শুরু করলাম কোথায় থেকে এলো এই ভীষণ ঢং
 ঢং আওয়াজ। আরে মাথার ওপরই তো ঘড়ি! এবার ঘড়িটা হলো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
 জানলাম আশপাশের এলাকার মানুষদের সময় দেখার সমস্যা মেটানোর জন্য আজ থেকে
১৬৩ বছর আগে ১৮৫২ সালে ঘড়িটি তৈরি করেছিলেন হাজী মুহসীন। এক কিলোমিটার দূর
থেকেও শোনা যায় ঘড়ির শব্দ। ঘড়িটি আজও আছে সচল। কাহিনী ইমামবাড়ার অন্যতম
খাদেম মির্জা মুন্না আলীর কাছ থেকে-ঘড়িটির নাম 'বিগ ব্যান্ড'। লন্ডনের
বিখ্যাত 'ব্ল্যাক অ্যান্ড মোরে' কম্পানি এটি তৈরি করেছিল। ঘড়িটি মেরামত,


তেল দেওয়া ও নানা কাজের পেছনে বছরে খরচ হয় লাখ দেড়েক টাকা। দুজন পেশাদার
ঘড়িওয়ালা ২০ কেজি ওজনের চাবি দিয়ে সপ্তাহে আধাঘণ্টা করে চাবি দেন। তাতেই
সচল থাকে ঘড়ি। ইমামবাড়ার পেছনে যাওয়ার পরে চমকে দিল সূর্যঘড়ি। সামনের
এলাকাবাসীর জন্য দেয়ালে ঘড়ি লাগিয়েছিলেন দানবীর।see more
হাজী মুহসীনের দুই ঘড়িআজও সচল সূর্যঘড়ি
আর পেছনের মানুষের জন্য তৈরি করেছিলেন একই সময়ে এই বিশাল সূর্যঘড়ি। ইমামবাড়ার পেছনেই গঙ্গা। সে নদীর কিনারে এই সূর্যঘড়ি। ইট, বালু, সিমেন্টের একটি স্তম্ভ। তার ওপরই সিমেন্টের পাত। সাদা সেই পাতের ওপর একটি ঘড়ির আদল দেওয়া আছে। ডায়ালগুলো কালো কালি দিয়ে দাগ কাটা। মাঝখানে ত্রিভুজাকৃতির দণ্ড। সেটির ওপর সূর্যের আলো এসে পড়ে। ফলে দণ্ডের ছায়া পড়ে ডায়ালের ওপর। ডায়াল সব রোমান হরফের। চাঁদের আলো সময় জানায়, সূর্যের আলোও। কেবল অমাবস্যার রাতে অচল থাকে সূর্যঘড়ি, আকাশ একেবারে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়লেও সময়ঘড়ি চলে না। কলকাতা থেকে সঙ্গে আসা ট্যাক্সিচালক ইদ্রিস আলী আমার হতভম্ভ মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, 'সূর্যঘড়িতে এখন দুপুর ১টা ২০ মিনিট। আপনার ঘড়িতে কয়টা বাজে?' আমার ঘড়িতেও তখন ১টা ২০ মিনিট!

- See more at: http://www.kalerkantho.com/feature/obak-prithibi/2015/01/09/173046#sthash.Bb9Q9B0W.dpuf

No comments:

Post a Comment